
জনপ্রিয় লেখক ও নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের শরীরে ধরা পড়েছে ঘাতক ব্যাধি ক্যান্সার। উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ বুধবার ভোর ৫টায় কাতার এয়ারওয়েজের একটি বিমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন তিনি।
লেখকের ঘনিষ্ঠজন ও তাঁর পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, সিঙ্গাপুরে রুটিন মেডিক্যাল চেক-আপে হুমায়ূন আহমেদের কোলন ক্যান্সার হয়েছে বলে ধারণা করছেন ডাক্তাররা। চিকিৎসকদের পরামর্শে তিনি নিউ ইয়র্ক যাচ্ছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তাঁর স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। ভক্তদের মধ্যে উৎকণ্ঠা বেড়ে যেতে পারে_এ শঙ্কায় তাঁর এই রোগের বিষয়ে তেমন কিছু জানাতে চাননি তাঁর ঘনিষ্ঠজনরা।
নিউ ইয়র্কের ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য বিখ্যাত সোলান কেটারিং ক্যান্সার সেন্টারে তিনি ভর্তি হবেন। সেখানেই তাঁর অস্ত্রোপচার হবে। কিছুদিন আগে ভারতের কংগ্রেস প্রধান সোনিয়া গান্ধীর সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে এ হাসপাতালে।
হুমায়ূন আহমেদের অতি ঘনিষ্ঠ এবং তাঁর প্রধান প্রকাশক পাক্ষিক পত্রিকা অন্যদিনের সম্পাদক এবং অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে চিকিৎসার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, চিকিৎসার জন্য তিনি আমেরিকার নিউ ইয়র্ক যাচ্ছেন। স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন ও দুই সন্তান তাঁদের সঙ্গে যাচ্ছেন। তাঁদের সঙ্গে মাজহারুল ইসলাম নিজেও যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
এর আগে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে তাঁর ওপেন হার্ট সার্জারি করা হয়। এর পর থেকে তিনি নিয়মিত চেক-আপের জন্য সিঙ্গাপুর যেতেন। সম্প্রতি সেখানে গেলে চিকিৎসকরা হুমায়ূন আহমেদের কোলন ক্যান্সার হয়েছে বলে ধারণা করেন।
লেখকের ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হুমায়ূন আহমেদের শরীরে ক্যান্সার এখন চতুর্থ ধাপে রয়েছে। এটি শরীরের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পড়েছে।
অবসর প্রকাশনীর প্রধান নির্বাহী আলমগীর রহমান গতকাল রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'হুমায়ূন আহমেদ অত্যন্ত সাহসী ও দৃঢ়চিত্তের মানুষ। শরীরে এত বড় রোগ নিয়েও তিনি খুব স্বাভাবিক রয়েছেন। নিয়ম করে লিখছেন, পড়ছেন। তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে আসবেন সবার কাছে_এ বিষয়ে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।'
ঔপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার, চিত্র পরিচালক ও গীতিকার। তিনি বাংলা ভাষায় সর্বপ্রথম সায়েন্স ফিকশন লেখেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় আড়াই শ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক। অতুলনীয় জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও তিনি নিভৃত জীবনযাপন করছেন। তাঁর বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
No comments:
Post a Comment